
আমরা গর্ব করি প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা নিয়ে। হাতে মোবাইল, ঘরে ইন্টারনেট—সবকিছুই এখন এক ক্লিক দূরে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমরা কি এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছি সচেতনভাবে?
একজন ১২ বছরের জাপানি কিশোর কোডিং শিখছে, নিজেই বানিয়ে ফেলছে ছোট একটি মোবাইল অ্যাপ।
একজন ১৪ বছরের জার্মান কিশোর ইউটিউবে ভিডিও বানাচ্ছে কিভাবে বিজ্ঞান পরীক্ষা করতে হয়।
একজন ১০ বছরের কোরিয়ান শিশু 3D প্রিন্টারে নিজের ডিজাইন করা খেলনা তৈরি করছে।
আর আমাদের দেশের একই বয়সী শিশু?
👉 সকালবেলা ঘুম ভাঙে ইউটিউব কার্টুনে।
👉 দুপুরে খায় হাতে মোবাইল নিয়ে।
👉 বিকেলে ফ্রি ফায়ার/পাবজি নিয়ে উত্তেজনায় চিৎকার।
👉 রাতে ঘুমাতে হয় স্ক্রিন না পেলে কান্না করে।
এই দুই রকমের শিশুর মাঝে পার্থক্য কেবল প্রযুক্তির ব্যবহার নয়—পার্থক্যটা গড়ে দিচ্ছে তাদের শিক্ষা, দৃষ্টিভঙ্গি আর সচেতনতা।
তারা জানে প্রযুক্তি মানে শুধু বিনোদন নয়, বরং শিখতে শেখাতে, নতুন কিছু তৈরি করতে ব্যবহার করতে হয়।
আমরা জানি, কিন্তু মানি না।
আমরা প্রযুক্তিকে ‘চাইল্ড কেয়ার’ বানিয়ে ফেলেছি।
আর তারা প্রযুক্তিকে বানিয়েছে ‘চাইল্ড গ্রোথ টুল’।
আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করছি বিনোদনের জন্য। আর তারা ব্যবহার করছে ভবিষ্যত গড়ার জন্য।
এই দুই ব্যবহারের মাঝে যে বিশাল পার্থক্য—তার শিকড় লুকিয়ে আছে সচেতনতার মধ্যে।
📌 সচেতনতা শেখায় কখন স্ক্রিন বন্ধ করতে হবে।
📌 সচেতনতা শেখায় কিভাবে স্ক্রিনের ভেতরে নয়, বাস্তব জীবনে সাফল্য খুঁজে নিতে হয়।
📌 সচেতনতা শেখায় প্রযুক্তিকে গোলাম বানাতে, নিজে তার দাস না হয়ে।
আমরা চাই না আমাদের সন্তান কেবল ইউজার হোক—আমরা চাই সে হোক ক্রিয়েটর, চিন্তক, উদ্ভাবক।
তাই শুরু হোক সচেতনতার অনুশীলন ঘর থেকেই—
তাদের হাতে মোবাইল না দিয়ে দিন মস্তিষ্কের খোরাক। দিন স্ক্রিনফ্রি খেলনা, দিন বাস্তব অভিজ্ঞতা।
আমরা যদি চাই আমাদের সন্তানরাও প্রযুক্তিতে দক্ষ হোক, তাহলে তাদের শেখাতে হবে কীভাবে প্রযুক্তিকে সচেতনভাবেব্যবহার করতে হয়, কীভাবে সেটা দিয়ে নিজের জীবনে ও সমাজে পরিবর্তন আনা যায়।
প্রযুক্তি হাতিয়ার, তা দিয়ে ঘরও বানানো যায়, আবার ক্ষতিও। পার্থক্যটা তৈরি করে আমাদের চেতনাই।
📢 এখন সময় এসেছে প্রশ্ন করার:
- আমরা কি আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য প্রযুক্তিকে আশীর্বাদ হিসেবে ব্যবহার করছি?
- নাকি আমরা নিজেরাই তাদের হাতে এক ধরনের ‘ডিজিটাল নেশা’ তুলে দিচ্ছি?
সচেতন ব্যবহারই পারে এই ব্যবধান ঘোচাতে।
📌 প্রযুক্তিকে ব্যবহার করুন গঠনমূলক কাজে।
📌 শিশুকে দিন স্ক্রিনের বদলে সংযোগ, চিন্তা, কল্পনা আর সৃজনশীল খেলার সুযোগ।
🎯 আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত:
“প্রযুক্তির দাস নয়, প্রযুক্তির দিকপাল হয়ে উঠুক আমাদের নতুন প্রজন্ম।”
লিখায় ভুল-ত্রুটি মার্জনা করবেন। নিজের মতো করে লিখেছি। গঠনমুলক মন্তব্য লিখে সহযোগিতা করুন।